৮ মাসের শিশুর গতিবিধি, বিকাশ এবং লালনপালন | Development Of 8 Months Old Baby In Bengali

Written by
Last Updated on

In This Article

জন্মের সময় থেকে বেড়ে ওঠা পর্যন্ত আপনার ছোট্ট সোনার দরকার বিশেষ যত্নআত্তি। এইসময় শিশুর ছোটো ছোটো বিষয়ে বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কারণ সঠিক দেখভাল এবং ভালো খাওয়াদাওয়া শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের উপর প্রভাব ফেলে। আমাদের এই প্রবদ্ধে ৮ মাস বয়সী শিশুর বিকাশ এবং গতিবিধি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হল।

৮ মাস বয়সী শিশুর ওজন এবং উচ্চতা কতটা হওয়া উচিত?

অষ্টম মাসে একটি শিশু কন্যার স্বাভাবিক ওজন ৬.৯ কেজি থেকে ৮.৯ কেজি এবং দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৮.৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। অন্যদিকে এইসময় একটি বেবি বয়-এর ওজন ৭.৫ কেজি থেকে ৯.৮ কেজি এবং দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০.৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে (1)। এছাড়াও যে বিষয়টি মনে রাখা দরকার সেটি হল, শিশুর শারীরিক বিকাশ নির্ভর করে জন্মের সময় তার ওজন কত ছিল তার উপর। জন্মের ৫ মাস পর তার ওজন জন্মের ওজনের দ্বিগুণ হয়ে যায়। একবছর পর সেই ওজন তিনগুণ হয়ে যায়। এই বিষয়টি সঠিকভাবে খেয়াল রাখতে যখনই আপনি বাচ্চাকে চেকআপের জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন, তার ওজন এবং উচ্চতা নোট করে নিন। প্রয়োজনে একটি চার্ট তৈরি করে নিতে পারেন।

নিবন্ধের এই বিভাগে আমরা একটি ৮ মাস বয়সী শিশুর সার্বিক বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করব।

৮ মাসের শিশুর বিকাশের মাইলস্টোন কী?

শিশুর স্বভাব, চরিত্র এবং কথাবার্তা কেমন হবে তা নির্ভর করছে সে কোন পরিবেশে বেড়ে উঠছে তার উপর। জন্মের পর প্রতি মাসে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটে। নীচে ৮ মাসের শিশুর ক্রিয়াকলাপ এবং বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

  • মস্তিষ্কের বিকাশ

লুকিয়ে রাখা বস্তুর অনুসন্ধান : ৮ মাস বয়সে একটি শিশুর মস্তিষ্কের এতটা বিকাশ ঘটে যে সে লুকিয়ে রাখা জিনিসপত্রের খোঁজ করতে শুরু করে। যদি কোনও জিনিস বাচ্চাকে দেখিয়ে লুকিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সে ওই জিনিসটির সন্ধান করার চেষ্টা করে। প্রায়শই বাচ্চার সঙ্গে খেলা করতে করতে মায়েরা লুকিয়ে থাকেন, বাচ্চা তখন তার মাকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করে (2)

আয়নায় চিত্র বোঝা : শিশুর যখন ৮ মাস বয়স হয় তখন তার মস্তিষ্কের এতটা বিকাশ হয়ে যায় যে সে আয়নার চিত্রগুলি বুঝতে শুরু করে (2)

আওয়াজের পার্থক্য বোঝা : বাচ্চারা ৮ মাস বয়সে শব্দগুলি সনাক্ত করতে এবং তার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। সে আপনজনের গলার আওয়াজ শুনে তাদের চিনতে পারে (2)

  • শারীরিক বিকাশ

দাঁড়ানোর চেষ্টা : এইসময় শিশুর নিচের পেশীগুলির উন্নতি ঘটে এবং আপনার ছোট্ট সোনা পায়ের উপর ভর করে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে পারে (2)

উল্টাতে পারে : বাচ্চারা খেলতে খেলতে বিছানায় উল্টাতে শিখে যায়। স্বাভাবিকভাবেই তা দেখে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটে ওঠে (2)

সাহায্য ছাড়া বসে থাকা : এইসময় বাচ্চারা আস্তে আস্তে কোনও রকম সাহায্য ছাড়াই বসার চেষ্টা করে। প্রথমে হাতের উপর ভর করে উঠে বসে এবং কিছুক্ষণ কোনও সাপোর্ট ছাড়াই বসে থাকে। বসার চেষ্টা করলেও বাচ্চারা এভাবে বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না (2)

জিনিসপত্র ধরে থাকা : ৮ মাস বয়সী বাচ্চারা কোনও জিনিস বা খেলনা শক্ত করে হাতে ধরতে শিখে যায়। হাতের হাতের মুঠোয় শক্ত করে জিনিসপত্র ধরতে শিখে যায় (2)

খেলনা ব্যবহার করা : শিশু যখন কোনও জিনিস দেখে তখন সেটি ধরার চেষ্টা করে। ৮ মাস বয়সে শিশুর মধ্যে কোনও জিনিস ধরে রাখার মতো বোধ এসে যায়।

  • সামাজিক এবং মানসিক বিকাশ

আবেগ প্রকাশ : নিজের জন্য তৈরি করা খাবার দেখে বা স্নানের সময় জল দেখে হাসতে থাকে এবং তার আগ্রহ প্রকাশ করে (2)

প্রতিক্রিয়া দেওয়া : মা-বাবা যখন শিশুটির সঙ্গে খেলা করে তখন সে খুশিতে হাসতে থাকে এবং বিরক্ত হলে কেঁদে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে (2)

অনেকের সঙ্গে খেললে খুশি হয় : শিশু তার সমবয়সী বাচ্চাদের সাথে খেলতে বা বাবা-মা এবং আত্মীয়দের সঙ্গে খেলা করলে আনন্দ পায় (2)

নিজের নামে প্রতিক্রিয়া : বয়স ৮ মাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু বুঝতে শিখে যায় যে তার নাম ধরে ডাকা হচ্ছে। নিজের নাম ডাকতে শুনলে সে তখন নিজের মতো করে সাড়া দেয় (2)

৮ মাসের শিশুকে কোন কোন টিকা দেওয়া জরুরি?

শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য সময়ে সময়ে তাকে সমস্ত টিকা দেওয়া জরুরি। যাতে সে সুস্থ থাকে। নিচে ৮ মাস বয়সী শিশুর জন্য কোন কোন ভ্যাকসিন প্রয়োজনীয় সেগুলি দেওয়া হল (3) :

  • এইচবিভি-এর তৃতীয় ডোজ, যা শিশুর বয়স ৬ মাস হওয়ার পর দেওয়া যেতে পারে।
  • আইপিভি-এর তৃতীয় ডোজ, এটি বিশেষ করে শিশু ৩ মাসের হওয়ার পর দেওয়া হয়ে থাকে।
  • ফ্লু ভ্যাকসিন যা ৬ থেকে ৭ মাসের শিশুকে দেওয়া হয়।

দ্রষ্টব্য : শিশুর জন্মের পর বাবা-মায়ের হাতে টিকাকরণের চার্ট দেওয়া হয়। সেই চার্টে কোন বয়সে কোন ভ্যাকসিন দিতে হবে সে সম্পর্কে তথ্য দেওয়া থাকে। তবে টিকা দেওয়ার আগে শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে অবশ্যই আলোচনা করুন।

৮ মাসের শিশুর জন্য প্রতিদিন কতটা দুধ প্রয়োজন?

জন্মের পর শিশুর জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে মায়ের দুধ। মায়ের দুধের কোনও বিকল্প হয় না। পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পেলে তবেই শিশু স্বাস্থ্য ভালো হবে এবং ফুর্তি থাকবে। জন্মের পর শিশুর বড় হওয়ার সঙ্গে তার দুধ খাওয়ার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে যেহেতু ৮ মাস বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চারা শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে দেয়, তাই শিশুর শারীরিক চাহিদার উপর নির্ভর করছে কে কতটা দুধ খাবে। শিশুর বয়স ৬ মাস হওয়ার পর কেবলমাত্র দুধ তার জন্য যথেষ্ট নয়। তাকে অন্যান্য শক্ত এবং ভারী খাবার দেওয়ার দরকার।

মায়ের দুধ : ৮ মাস বয়সী শিশু প্রতিদিন গড়ে ৯৪৬ মিলিমিটার দুধ পান করতে পারে (4)। আপনি ২৪ ঘণ্টায় বাচ্চাকে ৬-৮ বার দুধ খাওয়াতে পারেন।

ফর্মুলা দুধ : কখনও কখনও কোনও কারণে শিশুকে ফর্মুলা দুধ খাওয়াতে হয়। সেক্ষেত্রে তাকে প্রতিদিন প্রায় ৯৪৬ মিলিলিটার দুধ খাওয়াতে পারেন (4)

দ্রষ্টব্য : প্রতিটি শিশুর দুধ খাওয়ার মাত্রা কম বা বেশি হতে পারে। কারণ তা প্রতিটি শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে।

৮ মাসের শিশুর জন্য কতটা খাবার প্রয়োজন?

এখানে আমরা ৮ মাস বয়সী বাচ্চাকে কতটা পরিমাণে খাবার দেওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করব (5)। তবে শিশুর খিদের উপর খাবারের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে (6)

খাদ্য পদার্থমাত্রা
শস্য (শুরুতে বাচ্চাকে সেরেল্যাক দেওয়া ভালো)প্রতিদিন ৪-৮ চামচ পর্যন্ত বা তার বেশি দিতে পারেন।
সবুজ শাক-সবজিপ্রতিদিন ৪-৮ চামচ পর্যন্ত দিতে পারেন।
ফল৪-৮ চামচ পর্যন্ত ফল খাওয়ানো যেতে পারেন।
মাংস১-৩ চামচ পর্যন্ত খাওয়াতে পারেন।
দুধ৭০৮ থেকে ৯৪৪ মিলিলিটার পর্যন্ত খাওয়াতে পারেন।

৮ মাস বয়সী শিশুর জন্য কতটা ঘুম দরকার?

৮ মাসের শিশু ২৪ ঘণ্টায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমাতে পারে। দিনে ২-৩ বার ঘুমাতে পারে। ৮ মাস বয়সী শিশুরা যারা মায়ের দুধ খায়, তাদের খিদে পেলে রাতে ঘুম থেকে উঠতে পারে (7)

দ্রষ্টব্য : প্রতিটি শিশুর মধ্যে যেমন দুধের মাত্রায় পার্থক্য রয়েছে তেমনি শিশুর ঘুমের সময়েরও পার্থক্য থাকতে পারে।

৮ মাসের শিশুর জন্য খেলাধুলা এবং ক্রিয়াকলাপগুলি

আপনার সন্তান ৮ মাস বয়সে আরও ভালোভাবে খেলতে শুরু করবে। এই বয়সে বাচ্চারা আর কী কী করে জেনে নিন –

  • স্নান করানোর সময় ৮ মাস বয়সী শিশুরা জলে হাত পা ছুড়তে থাকে। বাচ্চারা এমনটা করতে পছন্দ করে।
  • ছোট বাচ্চারা বল নিয়ে খেলতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। তারা বলটি ধরার চেষ্টা করে।
  • ৮ মাসের শিশু তার সমবয়সী অন্যান্য শিশুর সঙ্গে কথা বলা চেষ্টা করে।
  • গান বা মিউজিক শুনলে এইসময় বাচ্চারা খুব আনন্দ পায়, ওরা নাচ করার চেষ্টা করে। অদ্ভূত আওয়াজ বের করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানায়।
  • বাজারের আজকাল নানান ধরনের খেলনা পাওয়া যায়, যার সাহায্যে বাচ্চারা হাঁটতে পারে। এই বয়সে বাচ্চা ওয়াকারের সাহায্যে হাঁটতে পারে।

৮ মাস বয়সী শিশুর বাবা-মায়ের সাধারণ স্বাস্থ্যের উদ্বেগগুলি

শিশুর শরীর খুব কোমল ও নমনীয় হয়, যা কারণে অল্পতেই অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণে জন্মের পর থেকেই শিশুর স্বাস্থ্যের বিষয়ে বাবা-মায়ের চিন্তিত থাকা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। এইসময় শিশুর স্বাস্থ্যে যে সমস্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে :

কোষ্ঠকাঠিন্য : বাচ্চাদের প্রায়শই কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা হয় কারণ তাদের হজম প্রক্রিয়া অতটা উন্নত হয় না। তাই বাচ্চার খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে বাবা-মায়ের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। বিশেষ করে বাচ্চাকে ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন ডাল, ফলের স্মুদি এবং শাকসবজি ইত্যাদি খেতে দেওয়া উচিত (8)

র‍্যাশ : ৪ থেকে ১৫ মাসের শিশুদের ডায়াপারের কারণে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির সমস্যা হতে পারে। বাবা-মায়েদের যে বিষয়ে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন (9)

জল থেকে অসুস্থতা : বাচ্চাকে স্নান করানো নিয়েও বাবা-মায়েরা উদ্বিগ্ন থাকেন। ছোট বাচ্চা বেশি ঠান্ডা জলে স্নান করালো নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাচ্চাকে প্রতিদিন স্নান করানো এবং সাবান মাখানোর খুব একটা প্রয়োজন নেই (10)

গ্যাসের সমস্যা : অনেক সময় শিশুর গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের চিন্তা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। বাচ্চা যদি একটানা অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে বা বিরক্ত হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজন (11)

দাঁতের সমস্যা : অনেকের চার মাস বয়সের পরই দাঁত বেরিয়ে যায়। এইসময়ে বাচ্চারা নরম খেলনা মুখে ঢোকায় এবং চেবানোর চেষ্টা করে। তবে খেলনাগুলো শিশুর বয়স এবং পছন্দ অনুসারে হওয়া উচিত।

শিশুর শোনার ক্ষমতা, দৃষ্টিশক্তি এবং অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলি

আমার সন্তান কী দেখতে পারবে?

৮ মাস বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর দৃষ্টিশক্তি ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়ে যায়। সে খুব সহজেই কাছের এবং দূরের বা গতিশীল জিনিস দেখতে পারবে। এই বয়সে বাচ্চারা বইয়ের রঙিন ছবি দেখে আনন্দিত হয়ে ওঠে (12)

আমার বাচ্চা কী শুনতে পাবে?

শিশু তার মায়ের গর্ভ থেকে শুনতে শুরু করে। তার সামনে যে নাম বার বার বলা হয় সেটা ওদের মনে থেকে যায়। আপনি যখনই কিছু বলবেন ওরা নিজের মতো করে প্রতিক্রিয়া জানাবে। ৮ মাস বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওরা কিছু কিছু শব্দের অর্থ বুঝতে শুরু করে এবং দা, বা, এবং গা এর মতো শব্দ বলার চেষ্টা করে (12)

আমার বাচ্চা কী স্বাদ ও গন্ধ বুঝতে পারবে?

শিশুর বয়স ৮ মাস হলে ওরা খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ বুঝতে শুরু করে। সেইসঙ্গে নিজের পছন্দ এবং অপছন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে শুরু করে (12)

স্বাস্থ্যবিধি : শিশুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা

শরীর পরিষ্কার : শিশুর শরীর হালকা গরম জল দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। ঠান্ডা জল ব্যবহার করলে শিশু অসুস্থ হতে পারে। সঠিক সময়মতো পরিষ্কার না করলে শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মুখ পরিষ্কার করার সময় খেয়াল রাখুন, কোনও কিছু খেলেই ওদের মুখে গায়ে লেগে যায় এবং নোংড়া হয়ে যায়।

জামাকাপড় পরিষ্কার : বাচ্চার জামাকাপড় এবং বিছানায় ব্যবহৃত কাপড় গরম জলে অ্যান্টিসেপটিক মিশিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাতে শিশুর জামাকাপড় ভালো পরিষ্কার হবে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকবে না।

খেলনা পরিষ্কার : ছোটো বাচ্চারা খেলতে খেলতে খেলনাগুলি মুখে ঢুকিয়ে নেয়। তাই খেলনাগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুব দরকার। নয়তো খেলায় লেগে থাকা ব্যাক্টেরিয়ার শরীরে পৌঁচ্ছাতে পারে, সে থেকে বাচ্চারা অসুস্থ হতে পারে।

গোপণাঙ্গের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা : শিশুর গোপণাঙ্গের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুব জরুরি। তাই যখনই ডায়াপার বদলাবেন জল দিয়ে হালকা করে পরিষ্কার করুন এবং কোনও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন। তারপর কিছুক্ষণ সময়ের জন্য খোলা রেখে দিন যাতে প্রাকৃতিক আদ্রতা বজায় থাকে।

দাঁত ও মাড়ি পরিষ্কার : বাচ্চার বয়স ৬ মাস হলে এবার ওর দাঁত ও মাড়ি নরম ব্রাশ বা আঙুল দিয়ে পরিষ্কার করা শুরু করুন। যদি আঙুল দিয়ে পরিষ্কার করেন তাহলে প্রথমে নিজের হাত বালো করে পরিষ্কার করে নিন।

বাবা-মা শিশুর বিকাশে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন

শিশুর বিকাশে বাবা-মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। জেনে নিন কীভাবে :

  • আশেপাশের পরিবেশ শিশুর বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে সন্তান যাতে ভালো পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।
  • বাচ্চাকে একা রাখবেন না, যতটা বেশি সম্ভব ওর সঙ্গে সময় কাটান।
  • বাচ্চাকে হাসিখুশি রাখতে গান গেয়ে শোনান এবং ঘুম পাড়ানোর সময় ঘুমপাড়ানি গান গান। তাতে সন্তানের সঙ্গে মায়ের মায়ের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
  • আপনার বাচ্চাকে পুষ্টিকর খাবার দিন। পুষ্টিকর উপাদান কেবলমাত্র মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক নয় শারীরিক বিকাশেও সাহায্য করে।
  • বাচ্চাকে কিছু সময়ের জন্য খোলা জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান। ওর সমবয়সী বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিন।

৮ মাস বয়সী শিশুর বিকাশের বিষয়ে বাবা-মায়ের কখন চিন্তা করা উচিত?

  • আপনি যদি আপনার সন্তানের মধ্যে নিম্নলিখিত কোনও লক্ষণ লক্ষ্য করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় (12)
  • আপনার সন্তানের চোখে যদি কোনও ঘাটতি লক্ষ্য করেন। উদাহরণ স্বরূপ, দুই চোখ যদি সঠিকভাবে নড়াচড়া না করে।
  • শিশু যদি দূরের কোনও জিনিস বা কোনও ব্যক্তিকে চিনতে না পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে শিশুটিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার।
  • যদি শিশুর চোখের নিচে লালভাব দেখা যায় তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে অবশ্যই নিয়ে যান।
  • আপনার বাচ্চা যদি আলোর প্রতি খুব সংবেদনশীল হয়ে ওঠে তবে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
  • বাচ্চা যদি অতিরিক্ত চোখ ঘষাঘষি করে তাহলে সেটা উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

এই মাসের জন্য চেকলিস্ট

শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বাবা-মায়েদের একটি চেকলিস্ট তৈরি করা দরকার। আসুন জেনে নিন সেই চেকলিস্টে কী কী থাকতে হবে।

  • নির্ধারিত সময়ে শিশুর ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে নিয়ে যান।
  • শিশুর ওজন এবং দৈর্ঘ্য নিয়মিত নোট করে রাখুন।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দুধের পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা তৈরি করুন।
  • শিশু কত ঘণ্টা ঘুমাচ্ছে তার হিসাব রাখুন।
  • কখন কোন ভ্যাকসিন দিতে হবে তা খেয়াল রাখুন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

৮ মাসের বাচ্চা কী অনেক সময় পর্যন্ত ঘুমাতে পারে?

উ : হ্যাঁ, ৮ মাসের শিশু ২৪ ঘণ্টায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমাতে পারে। কোনও শিশু আবার এর কম বা বেশি সময়ও ঘুমাতে পারে (7)

আমার বাচ্চার বয়স ৮ মাস কিন্তু এখনও প্রথম দাঁত বেরোয়নি। এতে কী কোনও সমস্যা আছে?

উ : সাধারণ ৪ থেকে ৭ মাসের মধ্যে শিশুর প্রথম দাঁত বেরোয়। তবে কিছু বাচ্চার দাঁত বেরোতে এর থেকে বেশি সময় লাগে। তাতে চিন্তার কিছু নেই। তবে প্রয়োজনে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন (13)

৮ মাসের বাচ্চাকে কী মাংস দেওয়া যাবে?

উ : হ্যাঁ, আপনি ৮ মাসের শিশুকে মাংস দিতে পারেন। এই বয়সে শিশুকে মাংস দিলে তার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপদান পৌঁছায়। যা শিশুর শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে। তাহলে মাংস খাওয়াতে শুরু করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করুন (6)

৮ মাসের শিশুরা এইসময় খুব তাড়াতাড়ি নতুন নতুন জিনিস শিখতে শুরু করে। বাবা-মায়েরা যদি শিশুর বিকাশে সঠিক সহায়তা করেন তাহলে শিশুর সঠিক বিকাশ ঘটে। যা শিশুর উজ্জ্বল ভবিষৎ তৈরি করতে সাহায্য করে।

References

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our vibrant community! Share your stories, experiences, and insights to connect with like-minded individuals.

Latest Articles