Development of 10 months old baby

Written by Chaitali Ghosh
Last Updated on

In This Article

আপনি আপনার সন্তানের মধ্যে এখন অনেকটাই পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। দশ মাস বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট্ট শিশুটি আগের থেকে এখন অনেক বেশি চনমনে, স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র। সে এখন নিজে নিজে খেলা করতে করতে পারে, অনেকে হাঁটতেও শিখে যায়, অন্যদের সঙ্গে নিজের মতো করে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করে। বাচ্চার বিকাশ এইসময় খুব দ্রুত হয়। ছোট্ট সোনাকে এইসময় খুব চোখে চোখে রাখা প্রয়োজন, যাতে ওর কোনও আঘাত না লেগে যায়। আমাদের এই প্রতিবেদনে ১০ মাস বয়সী শিশুর বিকাশ, গতিবিধি এবং তার সঠিক লালনপালন সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

১০ মাসের শিশুর ওজন এবং উচ্চতা কতটা হওয়া উচিত?

একটি দশ মাসের ছেলের ওজন ৮.২ কেজি থেকে ১০.৬ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। উচ্চতা হতে পারে ৬৯.২ সেন্টিমিটার থেকে ৭৫.৬ সেন্টিমিটার। অন্যদিকে একটি শিশু কন্যার ওজন ৭.৫ কেজি থেকে ৯.৭ কেজি এবং উচ্চতা ৬৭.১ সেন্টিমিটার থে.৮ সেন্টিমিটার হতে পারে (1) (2)। তবে প্রত্যেকটা শিশুর ওজন আলাদা আলাদা হয়, ওজন কম বা বেশি হতে পারে। আপনার শিশুর ওজন এবং উচ্চতা সঠিকভাবে বাড়ছে কিনা সে বিষয়ে ডাক্তারের সঙ্গে অবশ্যই আলোচনা করুন।

১০ মাসের শিশুর বিকাশের মাইলস্টোন কী?

শিশুর জন্মের পর তার মধ্যে প্রত্যেকদিন নতুন নতুন পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। আর সেই পরিবর্তন তার বিকাশের লক্ষণ (3) (4):

  • মস্তিষ্কের বিকাশ

জিনিসপত্র চিনতে পারে : ১০ মাসের শিশুর বিকাশ এতটা বিকাশ ঘটে, যে সে তার পরিচিত জিনিসপত্র চিনতে পারে। বিশেষ করে নিজের প্রিয় খেলনা সহজেই চিনে যায়। সেইসঙ্গে ওর সামনে কোনও খেলনা লুকিয়ে দিলে সেটা তখনই খুঁজতে শুরু করে।

বইয়ের ছবি দেখে খুশি হয় : এই বয়সী বাচ্চাদের যদি বইতে রঙিন ছবি দেখান ওরা খুব খুশি হবে।

ভাষা বুঝতে শেখে : ভাষা বোঝার ক্ষমতা এই বয়সে তৈরি হয়ে যায়। মা ও তার কাছের মানুষদের ভাষা বুঝতে পারে। হ্যাঁ, না, এসো ইত্যাদি শব্দের অর্থ বুঝতে পারে।

মা বাবা বলতে পারে : এই বয়সে বেশির ভাগ বাচ্চারা মা, বাবা, মামা, দাদা বলতে পারে বা বলার চেষ্টা করে।

নির্দেশ বুঝতে পারে : বাচ্চাকে যদি কোনও কাজ করতে মানা করেন, তাহলে সে আপনার নির্দেশ বুঝতে শেখে। যেমন শান্ত হয়ে বসতে বললেও, ওরা তার অর্থ বুঝতে পারে।

  • শারীরিক বিকাশ

হামাগুড়ি দিতে পারে : আপনার সন্তান এখন হাটুর উপর ভর করে আঁকাবাঁকা পথে এগিয়ে যাবে। হামাগুড়ি দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক বিকাশ ঘটবে।

পেটের উপর ভর করে উঠতে পারে : এইসময় বাচ্চারা শুয়ে থাকলে নিজেই ওঠার চেষ্টা করে। পেটের উপর ভর করে উঠে বসতে চেষ্টা করে।

সাহায্য পেলে উঠে দাঁড়ায় : যেকোনও বস্তুর উপর ভর করে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।

চলার চেষ্টা : শিশুর সঠিক বিকাশ হলে এই বয়সে অনেক বাচ্চা হাঁটার চেষ্টা করে। একবার নিজের পায়ের উপর ভর করে দাঁড়াতে পারলে, হাঁটতে খুব বেশি সময় লাগে না। শুরুতে ধীরে ধীরে একে একে পা ফেলে, কিছুদিনের মধ্যে সাহায্য ছাড়াই হাঁটতে শিখে যায়। যেহেতু এইসময় পরে যাওয়ার ভয় থাকে, সেজন্য তার নিরাপত্তা আপনার প্রাথমিক উদ্বেগ হয়ে উঠতে পারে।

সামনে দাঁত ওঠে : ১০ মাসে শিশুর মুখে উপর ও নীচের মাড়িতে দুটো করে চারটে দাঁত বের হয় (5)

দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয় : জন্মের পর শিশুর দেখার ক্ষমতা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। ১০ মাস বয়সী শিশু নিজের সামনে দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া কোনও গাড়ির উপরেও দৃষ্ট নজড়ে চেয়ে থাকে। অনেক দূর পর্যন্ত সেটার উপর দৃষ্টি স্থির রাখতে পারে (6)

  • সামাজিক এবং মানসিক বিকাশ

টাটা করতে পারে : বাড়ি থেকে কেউ কোথাও গেলে, বাচ্চারা তাকে টা টা করতে শিখে যায়।

অচেনা ব্যক্তিতে দেখে ভয় পাওয়া : শিশু তার চারপাশে থাকা লোকজনকে ভালোভাবে চিনে যায়। তাদের সঙ্গে থাকতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তু অচেনা কাউকে দেখলে ভয় পায়, সেই মানুষটির কাছে যেতেও চায় না (7)

নিজের মানুষের প্রতি ভালোবাসা : এই বয়সে বাচ্চারা বুঝতে শিখে যায় কে তার নিজের বা কাছের মানুষ। তাই অন্য অপরিচিত মানুষের কাছে গেলে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। নিজের পছন্দের মানুষকে হারানোর একটা ভয় কাজ করে।

প্রতিক্রিয়া দেওয়া : একটি ১০ মাসের শিশু পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করে। যদি কেউ তার প্রিয় খেলনা লুকিয়ে দেয়, তাহলে সে কাঁদতে শুরু করে। অনেক বাচ্চা আবার রাগও প্রকাশ করে। তখন যদি আপনি ভালোবাসেন, ছোট্ট সোনা সঙ্গে সঙ্গে খুশিও হয়ে যায়।

১০ মাসের শিশুকে কোন কোন টিকা দেওয়া জরুরি?

শিশুর সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে সঠিক সময় টিকাকরণ খুব জরুরি। ১০ মাসের শিশুর ইনঅ্যাক্টিবেটেড পোলিও ভ্যাকসিন নামক টিকা দেওয়া হয়। এই টিকা ৯ থেকে ১২ মাসের শিশুকে দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো (8)

দ্রষ্টব্য : শিশুর জন্মের পর বাবা-মায়ের হাতে টিকাকরণের চার্ট দেওয়া হয়। সেই চার্টে কোন বয়সে কোন ভ্যাকসিন দিতে হবে সে সম্পর্কে তথ্যদি দেওয়া থাকে। তবে টিকা দেওয়ার আগে শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে অবশ্যই আলোচনা করুন।

১০ মাসের শিশুর জন্য প্রতিদিন কতটা দুধ প্রয়োজন?

জন্মের পর শিশুর জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে মায়ের দুধ। যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশুকে কেবল মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। তবে শিশুর বয়স ৬ মাস হওয়ার পর কেবলমাত্র দুধ তার জন্য যথেষ্ট নয়। তাকে অন্যান্য শক্ত এবং ভারী খাবার দেওয়ার দরকার। এখানে আমরা জেনে নেব ১০ মাসের শিশুকে দিনে কতটা মায়ের দুধ এবং ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো উচিত।

মায়ের দুধ : এই বয়সী শিশু প্রতিদিন গড়ে ৭০৯ থেকে ৮৮৭ মিলিমিটার মায়ের দুধ পান করতে পারে (9)

ফর্মুলা দুধ : যদি আপনার শিশু ফর্মুলা দুধ খায়, সেক্ষেত্রে তাকে প্রতিদিন প্রায় ৭০৯ থেকে ৮৮৭ মিলিলিটার পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে পারেন (9)

দ্রষ্টব্য : প্রতিটি শিশুর খাওয়ার ক্ষমতার উপর দুধের মাত্রা কম বা বেশি হতে পারে।

১০ মাসের শিশুর জন্য কতটা খাবার প্রয়োজন?

এই বয়সে শিশুর খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরু। কারণ সঠিক পুষ্টি আপনার বাচ্চার সঠিক বিকাশে সাহায্য করবে। এখানে আমরা ১০ মাস বয়সী বাচ্চাকে কতটা পরিমাণে খাবার দেওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করব (10):

খাদ্য পদার্থমাত্রা
শস্য৪ থেকে ৮ চামচ
সবুজ শাক-সবজি১/৪ থেকে ১/২ কাপ প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার
ফল১/৪ থেকে ১/২ কাপ প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বার
দই ইত্যাদি১/৪ কাপ প্রতিদিন ১ থেকে ২ বার
প্রোটিন (মাংস, চিকেন, মাছ, ডিম, বিনস, পনির)প্রতিদিন ১/৪ কাপ ১ থেকে ২ বার
অন্যান্য (ব্রেড, ভাত, নরম রুটি )১/৪ কাপ প্রতিদিন ২ বার

১০ মাস বয়সী শিশুর জন্য কতটা ঘুম দরকার?

১০ মাসের শিশু প্রতিদিন ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা ঘুমাতে পারে। রাতে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমাতে পারে। সারাদিনে দু’বার ঘুমাতে পারে (11)

দ্রষ্টব্য : প্রতিটি শিশুর মধ্যে যেমন খাওয়াদাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে তেমনি শিশুর ঘুমের সময়েরও পার্থক্য থাকতে পারে।

১০ মাসের শিশুর জন্য খেলাধূলা এবং ক্রিয়াকলাপগুলি

এইবয়সে একটি শিশুর এতোটা বিকাশ ঘটে যে সে তার পছন্দমতো খেলনা নিয়ে খেলতে শুরু করে। এটি দশমাসের শিশুর মধ্যে যে সমস্ত ক্রিয়াকলাপ এবং গতিবিধি লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল (12):

খেলামেলা জায়গা : এইসময় বাচ্চা নির্দিষ্ট কোনও জায়গায় বেশিক্ষণ থাকে না। যেহেতু এবার সে হামাগুড়ি দিতে বা হাঁটতে শিখতে তাই শিশুর জন্য দরকার খোলামেলা জায়গা। যাতে সে সহজে ঘুরে বেড়াতে পারে।

নিজের কাছে ডাকা : আপনি যদি দূরে থেকে বাচ্চা ডাকেন ওরা আপনার আওয়াজ পেয়ে আপনার কাছে ছুটে আসতে চাইবে। এভাবে খেলার ছ্বলে ওরা বেশ আনন্দ পাবে।

খেলনা : এই বয়সী বাচ্চারা চলন্ত কোনও খেলনা নিয়ে খেলতে বেশি পছন্দ করে। কারণ কোনও কিছু চলন্ত দেখলে ওরা সেটাকে ধরতে চেষ্টা করে, আনন্দও পায়। এতে বাচ্চার শারীরিক বিকাশে সাহায্য হয়।

খেলনা ফোন : মোবাইল ফোন আজকাল আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বাচ্চারাও জন্ম থেকেই আপনাকে বা বাড়ির কাউকে ফোনে কথা বলতে দেখতে। বাচ্চাকে যদি কোনও খেলনা ফোন দেন তাহলে সেও আপনার নকল করতে শিখবে। আনন্দ পাবে। কথা বলারও চেষ্টা করবে।  

১০ মাস বয়সী শিশুর বাবা-মায়ের সাধারণ স্বাস্থ্যের উদ্বেগগুলি

বাচ্চা স্বাস্থ্য নিয়ে বাবা-মায়েরা সবসময়ই চিন্তিত থাকেন। এই বয়সী বাচ্চাকে নিয়ে এইসমস্ত উদ্বেগ হতে পারে :

. দাঁত পরিষ্কার : এই বয়সে বাচ্চার দাঁত বেড়োতে শুরু করে। শিশুর দাঁতের যত্নও প্রয়োজন। নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। খাবার খাওয়ানোর পর পরিষ্কার কাপড় বা হাত দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে দেওয়া জরুরি। নয়তো দাঁত নষ্ট হয়ে যেতে পারে (13)

. খাবারে অ্যালার্জি : অনেক বাচ্চার নির্দিষ্ট কোনও খাবারে অ্যালার্জি থাকে। এই বয়সে বাচ্চা মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য ভারী ও মোটা খাবার খাওয়া শুরু করে। তাই কোনও খাবার থেকে তার কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজর দিতে হবে (14)

. জন্ডিস : নবজাতক শিশুর জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি হলেও, এই সমস্যা ১০ মাস বয়সী শিশুরও হতে পারে। তাই বাবা-মাকে শিশুর স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত (15)

শিশুর শোনার ক্ষমতা, দৃষ্টিশক্তি এবং অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলি

আমার সন্তান কী দেখতে পারবে?

১০ মাসের শিশু খুব সহজেই কাছের এবং দূরের জিনিস দেখতে পারে। সে গতিশীল কোনও জিনিসের উপর দৃঢ় নজর রাখতে পারে।

আমার বাচ্চা কী শুনতে পাবে?

১০ মাসের শিশু কেবলমাত্র ভালোভাবে শুনতেই পায় না, কিছু কিছু শব্দের অর্থও বুঝতে শিখে যায়। এমনকী আপনি যখন কিছু বলবেন ওরা নিজের মতো করে প্রতিক্রিয়া জানাবে। গা, বা, দা ইত্যাদি শব্দ বলার চেষ্টা করে।

আমার বাচ্চা কী স্বাদ গন্ধ বুঝতে পারবে?

শিশুর বয়স ১০ মাস হলে ওরা বাড়ির সাধারণ খাবার খাওয়া শুরু করে দেয়। তাই খাবারের স্বাদ এবং গন্ধ বুঝতে শুরু করে। গন্ধ শুকে নিজের পছন্দ এবং অপছন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে শুরু করে।

শিশুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা

বয়স যেটাই হোক না কেন শিশু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া জরুরি। বিশেষ করে এই পর্যায়ে কারণ শিশুর ভালোমন্দ তার বাবা-মায়ের উপরই নির্ভর করে :

. মুখ পরিষ্কার : ১০ মাসের শিশু বাড়ির সাধারণ খাবার খাওয়া শুরু করে দেয়। খাবার খাওয়ার পর ভালো করে মুখ পরিষ্কার করা খুব জরুরি। শিশুকে ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে, সংক্রমণে ভয় থাকে।

. হাত পরিষ্কার : বাচ্চার হাত নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। ১০ মাস বয়সে অনেক বাচ্চা নিজের হাতে খেতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে অপরিষ্কার হাত দিয়ে খাবার খেলে, সংক্রমণের ভয় থাকে। শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

. চুলের যত্ন : এই বয়সে চুল বেশ বড় হয়ে যায়। তাই চুলেও যত্ন প্রয়োজন। চুলের জন্য সঠিক তেল এবং চিরুনি ব্যবহার করা দরকার।

বাবা-মা শিশুর বিকাশে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন

এবার জেনে নিন এই বয়সে শিশুর বিকাশে তার বাবা-মা কীভাবে সাহায্য করতে পারেন :

  • মা-বাবা যখনই বাচ্চার কাছে থাকবেন, ভালো বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। যাতে শিশুর উপর সেইসব আলোচনার ভালো প্রভাব পড়ে।
  • শিশুর জন্য এমন খেলনা বেছে নিন যা ওর মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে।
  • শিশুকে প্রোটিনযুক্ত খাবার দিন, যাতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।
  • শিশুকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে দিন, যাতে পরিবারের সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
  • শিশুর সামনে মদ্যপান, ধূমপান একেবারেই অনুচিত। এতে শিশু স্বাস্থ্যের উপরও যেমন খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, মানসিকভাবেও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

১০ মাস বয়সী শিশুর বিকাশের বিষয়ে বাবা-মায়ের কখন চিন্তা করা উচিত?

এমনটা বললে ভুল বলা হবে, যে বাবা-মা তাঁর সন্তানের প্রতি চিন্তিত হবেন না। কারণ বাচ্চাকে নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তার কোনও শেষ নেই। আজ এটা তো কাল ওটা। কোনও না কোনও বিষয়ে চিন্তা লেগেই থাকে। এমন কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয় যা চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে (6)

  • বাচ্চা যদি অতিরিক্ত চোখ রগড়াতে থাকে তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
  • শিশুর ত্বকে ঘামাচি, র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির মতো দেখা দিলে তা চিন্তা বিষয় হতে পারে।
  • শিশুর নাক দিয়ে জল ঝড়া সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • শিশু যদি সঠিকভাবে খাবার না খায়, তাহলে অবশ্যই সেটা আপনার জন্য চিন্তার বিষয়।
  • বাচ্চার যদি হজমের সমস্যা হয়।
  • যদি শিশুর দৃষ্টিশক্তিতে কোনওরকম সমস্যা দেখা দেয়, দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

এই মাসের জন্য চেকলিস্ট

শিশুর সঠিক খেয়াল রাখতে আপনি একটি চেকলিস্ট তৈরি করতে পারেন, যেখানে এইসমস্ত বিষয় উল্লেখ করে রাখুন :

  • শিশুকে নির্ধারিত সময়ে ভ্যাকসিন দেওয়া।
  • নিয়মিত শিশুর ওজন এবং উচ্চতা চেক করা।
  • শিশু যাতে পর্যাপ্ত খাবার খায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। সঠিক সময় সঠিক মাত্রায় দুধ বা অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান।
  • খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শিশু যাতে পর্যাপ্ত জল খায় সেদিকেও কিন্তু নজর রাখতে হবে।
  • শিশুর যাতে পর্যাপ্তভাবে ঘুমায় সেদিকেও নজর দিন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

কী করলে আমার বাচ্চা সারারাত নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে ?

: বাচ্চারা একটা রুটিনের মধ্যে থাকতে ভালোবাসে। সে যে কোনও কিছুই হোক না কেন। সময়মতো খাওয়া, ঘুমানো তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। তাই বাচ্চার জন্য ঘুমানোর রুটিন শুরু থেকেই তৈরি করে নিন। সঠিক সময়মতো ঘুম পাড়ান। রাতে বাচ্চার খিদে পেতে পারে, তাই ঘুমানোর আগে সে যাতে পর্যাপ্ত খাবার খায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। দিনেও কিছুক্ষণ ঘুমানোর অভ্যাস রাখুন, যাতে রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারে।

১০ মাসের শিশু কী পনির খেতে পারে ?

: হ্যাঁ, আপনি আপনার বাচ্চাকে পনির খাওয়াতে পারেন। এইসময় পনির বাচ্চার জন্য সুস্বাস্থ্যকর (16)। তবে পনির খেলে বাচ্চার কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখুন, প্রয়োজনেজতজ-০ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

১০ মাসের শিশুকে কি ডিম খাওয়ানো যেতে পারে ?

: ডিম প্রোটিনে ভরপুর। ১০ মাসের শিশুকে ডিম খাওয়ানো যেতে পারে, তবে এর থেকে কোনওরকম অ্যালার্জি হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর দিতে হবে। সেইসঙ্গে ডিম যাতে ভালোভাবে সেদ্ধ করা হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

একটি ১০ মাসের শিশু অনেক কিছু জানতে এবং বুঝতে শিখে যায়। তার যাতে সঠিক বিকাশ ঘটে সেবিষয়ে বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার ছোট্ট ছোট্ট চেষ্টাগুলো একদিন আপনার ছোট্ট সোনার ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলবে। তাই তার যত্নআত্তিতে যেন কোনও ত্রুটি না থাকে। আশা করা যায় এই প্রতিবেদন আপনার জন্য উপকারী হবে। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

Reference :

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our vibrant community! Share your stories, experiences, and insights to connect with like-minded individuals.

Latest Articles