ফর্সা হওয়ার উপায় – ২৫ টি ঘরোয়া পদ্ধতি – Fairness Tips in Bengali

Written by
Last Updated on

খুব কম খরচে ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে কে না চায় বলুন তো? সুন্দর, উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যসম্মত ফর্সা ত্বকের অধিকারী সকলেই হতে চায়। তাই নিজের ত্বককে আরো ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন বাজারজাত ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। তবে সেই সমস্ত ক্রিমে ত্বকের উপকারের চেয়ে অপকারই হয় বেশি। কেননা বাজারজাত ক্রিমগুলিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দিনের পর দিন ত্বকের ওপর ব্যবহার করার ফলে ত্বক ক্রমশ নষ্ট হয়ে যেতে থাকে এবং মুখের চামড়া দিন দিন পাতলা হয়ে যায়। এই কারণে নিজের ত্বককে আরো সুন্দর, উজ্জ্বল মোহময়ী করে তোলার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতিরিক্ত সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকলে ত্বকের মেলানিন কালচে হয়ে যায়। তাই ত্বককে বাইরের দূষণ ও সূর্যের রশ্মি থেকে বাঁচাতে দৈনন্দিন যত্ন নেওয়া উচিত। পার্লারে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করালে তা সময় ও খরচা দুটিই ব্যয় করে। তাই ঘরে থাকা কয়েকটি জিনিসের মাধ্যমেই নিজের ত্বককে সহজেই ফর্সা করে তুলতে পারবেন। সুতরাং এবার আপনার হাতের মুঠোয় রয়েছে ফর্সা হওয়ার সহজ উপায়।

ঘরোয়া ভাবে ফর্সা হওয়ার উপায় : Fair Skin Home Remedies in Bengali

ঘরে হোক কিংবা বাইরে দৈনন্দিন কাজের ফাঁকেই চটজলদি ঘরে থাকা উপাদান দিয়েই এবার নিজের ত্বককে আরও সুন্দর করে তুলতে পারবেন। কেননা রান্নাঘরে কাজ করতে করতে সেখানকার কোন উপাদান দিয়েই চট করে দিনের শুরু কিংবা দিনের শেষে ত্বকের যত্ন সেরে নিতে পারবেন। এবার এক নজরে দেখে নিন ত্বকের ঘরোয়া ভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়:

১) লেবু দিয়ে পান সুন্দর ফর্সা ত্বক

কি কি উপাদান লাগবে :

পাতিলেবু : একটি

মধু : দু চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • একটি পাতিলেবু নিন।
  • সেটিকে কেটে লেবু থেকে সমস্ত রস বের করে নিন।
  • সেখান থেকে দু চামচ লেবুর রস এক চামচ জলে মেশান।
  • এবার এই মিশ্রণটি ত্বকের দাগ ছোপ যুক্ত জায়গায় লাগান।
  • লেবুর রস মধুর সাথে সম পরিমাণে মিলিয়েও মুখে লাগাতে পারেন।
  • এটি ত্বক থেকে যাবতীয় নোংরা এবং রোদের পোড়া দাগ তুলতে সাহায্য করবে।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
  • তবে এই মিশ্রণটি মুখে লাগানোর আগে অবশ্যই কানের পিছনে কিংবা গলায় লাগিয়ে দেখে নেবেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের যেকোনো দাগ ছোপ কে পরিষ্কার করে ত্বককে স্বচ্ছ করে তোলে এবং ত্বকের শুষ্কতা কাটিয়ে তাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। লেবুর মধ্যে থাকা ব্লিচিং উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে দাগ ছোপ হীন করে তোলে। এছাড়াও রোদে পোড়া দাগও সহজেই হালকা করে। ত্বক যখনই উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে উঠবে তখনই তা ফর্সা হয়ে উঠবে। ()

২) ত্বক ফর্সা করতে হলুদের ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়ো : এক চামচ
লেবুর রস : ২ চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • কাঁচা হলুদ বেটে নিন কিংবা হলুদ গুঁড়ো এক চামচ নিন।
  • এবার তার সাথে দু চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিন।
  • লেবুর রস এবং হলুদ গুঁড়ো ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। মূলতঃ যেই সমস্ত জায়গাগুলিতে সূর্যের তাপে কালচে হয়ে গিয়েছে, সেই জায়গাগুলিতে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে মুখটা ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে এক মাসের মধ্যে পার্থক্যটা নিজের চোখেই দেখতে পারবেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান ত্বকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি হিসেবে কাজ করে যা ত্বককে সমস্ত রকম জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান ত্বককে দ্রুত প্রক্রিয়ায় ফর্সা করে তোলে। এটি ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। এছাড়া ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ সরিয়ে দিয়ে ত্বককে সবসময় টান টান এবং উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে। হলুদ মুখে লাগানোর পাশাপাশি দৈনন্দিন খালি পেটে এক টুকরো করে খাওয়া গেলে তা শরীরকে ভিতর থেকে শুদ্ধিকরণ ঘটায়। ()

৩) দুধ ব্যবহার করে ত্বককে আরো ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

দুধ – ১ টেবিল চামচ
মধু – ১ চা চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • দুধ এবং মধুকে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • ত্বক যদি খুব শুষ্ক থাকে সে ক্ষেত্রে দুধের বদলে দুধের সর মধুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
  • এতে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই এই মিশ্রণটি মুখে ব্যবহার করতে পারেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

দুধের মধ্যে উপস্থিত প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ত্বকের রং কে ভিতর থেকে হালকা করে এবং ত্বককে বাইরে থেকে সুন্দর মসৃণ এবং আর্দ্র করে তোলে। দৈনিক দুধের ব্যবহারের ফলে ত্বক আরও লাবণ্যময় হয়ে ওঠে। এছাড়াও দুধ ত্বককে ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। এবং এটি ফর্সা হওয়ার একটি সহজ উপায়। ()

৪) ত্বক ফর্সা করে তুলতে টমেটোর ব্যবহার

The use of tomatoes to make skin tingle
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

টমেটো : দুটো
লেবুর রস : দুই চা চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • ২টি টমেটো মিক্সিতে বেটে নিয়ে মিশ্রন থেকে টমেটোর রস বের করে নেবেন।
  • তারপর পরিমাণমতো টমেটোর রস নিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করবেন।
  • টমেটো- লেবুর মিশ্রণটি সারা মুখে লাগাবেন।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
  • তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।
  • সপ্তাহে রোজ স্নানের আগে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে সান ট্যান বা ত্বকের দাগ ছোপ কমে যাবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

টমেটোর মধ্যে থাকা উপাদান গুলি ত্বকের দাগ ছোপ কমিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা এবং উজ্জ্বল করে তোলে। ত্বকের মধ্যে থাকা লাইকোপিন নামক উপাদান ত্বকে আর্দ্রতা প্রদান করে এবং ত্বকের ওপরে থাকা মৃত কোষগুলিকে সরিয়ে ত্বকের ট্যান দূর করতে সহায়তা করে। ()

৫) ত্বক ফর্সা করতে দইয়ের ভূমিকা

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

টক দই : ২ টেবিল চামচ
মধু : ১ চা চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • টক দই এবং মধু ভালো করে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
  • এবার প্যাকটি পরিষ্কার ত্বকে লাগান।
  • ১৫ মিনিট প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন।
  • অল্প শুকিয়ে এলে সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে রোজ এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে সহায়তা করবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম উপাদান দই। দই এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের ক্ষুদ্র লোমকূপে জমে থাকা ময়লাকে টেনে বার করে ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে। দৈনিকভাবে ত্বকে টক দই ব্যবহার করার ফলে ত্বকের রং হালকা হয় এবং তা ফর্সা হয়ে ওঠে। এছাড়া, যদি খাদ্য তালিকাতেও টক দই রাখা যায় তবে তা স্বাস্থ্যসম্মত হয়। ()

৬) গোলাপ জল দিয়ে ত্বককে ফর্সা করুন

Rub the skin with rose water
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

গোলাপ জল – পরিমাণ মতো
তুলো – প্রয়োজন মতো

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • প্রতিদিন গোলাপ জল তুলোর মধ্যে নিয়ে মুখটা পরিষ্কার করুন।
  • দিনে ২ বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • স্নানের আগে কিংবা বাইরে থেকে ঘুরে আসার পর গোলাপ জল দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে নিন।
  • এটি ত্বকের উপরিভাগে থাকা নোংরাগুলিকে দ্রুত সরিয়ে ফেলে ত্বককে একটি সতেজতার অনুভূতি এনে দেবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

গোলাপ জল ত্বককে ভিতর থেকে তরতাজা করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। দৈনিক গোলাপ জলের ব্যবহারের ফলে ত্বক লাবণ্যময়ী হয়ে ওঠে। মূলতঃ সংবেদনশীল ত্বকের জন্য গোলাপ জল খুব উপকারী উপাদান। এটি সহজেই বাজারে কিনতে পাওয়া যায় কিংবা বাড়িতেও বানিয়ে নেওয়া যায়। এটি সরাসরি ব্যবহার করার পাশাপাশি যে কোন প্যাকের মাধ্যমেও ত্বকে লাগানো যায়। গোলাপ জল ত্বকে একটি ঠান্ডা অনুভূতি এনে দেয়। ()

৭) ত্বক পরিচর্যায় পেঁপের ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

পাকা পেঁপে : অর্ধেক
মধু : ১ টেবিল চামচ
লেবুর রস : হাফ টেবিল চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • অর্ধেক পাকা পেঁপেটি মিক্সিতে ভালো করে বেটে নিন।
  • এরপর মিশ্রন করা পাকা পেঁপেটির মধ্যে মধু এবং লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
  • এবার প্যাকটি মুখে গলায় ঘাড়ে হাতে ভাল করে লাগিয়ে নিন।
  • এবার ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • ১৫ মিনিট পর সাধারণ জল দিয়ে এগুলো ধুয়ে ফেলুন।
  • পাকা পেঁপে সরাসরি আপনি আপনার ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
  • দৈনিক স্নানের আগে হাতে মুখে একবার যদি পাকা পেঁপে ব্যবহার করে নিতে পারেন তাহলে সান ট্যানের সমস্যা কমবে এবং আপনার ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • পেঁপের এই প্যাকটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • এছাড়া শুধু পাকা পেঁপে রোজ স্নানের আগে ব্যবহার করতে পারেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

পেঁপে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় ত্বকের উপযোগী সমস্ত উপাদান গুলি এর মধ্যে রয়েছে। এটি খাওয়া এবং এর পাশাপাশি মুখে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার ফলে একটি সুন্দর উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যেতে পারে। পেঁপেতে এক ধরনের এনজাইম থাকে যেটি ত্বককে ফর্সা করে তুলতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলি ত্বকের ওপর থেকে মৃত কোষগুলি সরিয়ে ত্বকের মধ্যে থাকা সুক্ষ ছিদ্র গুলিকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। যারা ব্রণ কিংবা ফুসকুড়ির সমস্যায় ভুগছেন কিংবা যাদের মুখে দাগ রয়েছে তাদের জন্য পেঁপে খুব উপকারী। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত যে ফাইন লাইনস রিংকেলস মুখে দেখা যায় সেগুলিকে পেঁপে কমাতে সহায়তা করে। পেঁপের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ত্বককে আর্দ্র এবং লাবণ্যময় করে তোলে। যার ফলে ত্বকের শুষ্কতা এটি দূর করে দেয়। ()

৮) ফলের প্যাক দিয়ে ত্বককে ফর্সা করুন

Scrub the skin with a fruit pack
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

আপেল : একটি
কমলালেবু : একটি

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • আপেল এবং কমলালেবু মিক্সিতে দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
  • মিশ্রণটি এবার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন।
  • ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে একদিন করে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটা ভিটামিন এ,বি,সি এবং ই সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বককে ভেতর থেকে মসৃণ এবং ফর্সা করে তুলবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

বিভিন্ন ফলের সংমিশ্রণে তৈরি করা প্যাক ত্বককে গভীরভাবে পুষ্টি প্রদান করে ফর্সা এবং সুন্দর করে তোলে।ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলি ত্বককে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিয়ে সুন্দর করে তোলে। মূলতঃ পেঁপে, অ্যাভোকাডো, কিউই, কলা, আপেল, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, আঙ্গুর, আম, তরমুজ, বেদানা প্রভৃতি ফলগুলি দিয়ে প্যাক তৈরি করে আমরা মুখে ব্যবহার করতে পারি। ()

৯) বেসন দিয়ে ত্বক ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

বেসন : চার চামচ
কাঁচা দুধ : এক চামচ
লেবু : এক চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • বেসন, দুধ এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার হাতে আস্তে আস্তে মুখের ত্বকের ওপর মেসেজ করুন।
  • এরপর ১৫ মিনিটের জন্য এটি মুখে রেখে দিন।
  • কিছু সময় পর মিশ্রণটি শুকিয়ে যাবে, তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করবে।
  • সপ্তাহে একদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
  • কিছুদিন ব্যবহারের ফলেই ত্বকে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

বেসন ত্বককে পরিষ্কার করে ত্বকে অতিরিক্ত তেলের পরিমাণ কমিয়ে ফর্সা করে তোলে। এছাড়াও এটি ব্রণ ও ফুসকুড়ি সারাতে একটি অনবদ্য উপাদান। মুখ থেকে চুলের পরিমাণ কমাতে কিংবা শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করতে, ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা কমাতে, বার্ধক্যজনিত ত্বকের সমস্যা দূর করতে বেসনের ব্যবহার অনবদ্য। ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে বেসন অন্যতম।

১০) ত্বক পরিচর্যায় অ্যালোভেরার ভূমিকা :

The role of aloe vera in skin care
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

অ্যালোভেরা জেল : ১ টেবিল চামচ
গোলাপ জল : কয়েক ফোঁটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • বাজার থেকে অ্যালোভেরা গাছের অংশ কিনে নিয়ে আসতে পারেন কিংবা দোকানে প্যাকেটজাত অ্যালোভেরা জেল পাওয়া যায় সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।
  • তবে অ্যালোভেরার জেল যেটি গাছের থেকে পাওয়া যায় সেটি সরাসরি ত্বকে লাগালে অনেক সময় এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্যাকেটজাত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করাই ভালো।
  • অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তার মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে একটি হালকা মিশ্রণ তৈরি হবে।
  • সেটি পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • এরপর ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • দিনে দুবার সকালে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে এই পদ্ধতিটি মেনে চলুন।
  • এতে এক সপ্তাহের মধ্যেই দেখতে পারবেন ত্বকে কিরূপ পরিবর্তন এসেছে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে থাকা ভিটামিন, খনিজ উপাদানগুলি ত্বককে উপযুক্ত পুষ্টি জুগিয়ে ত্বককে আরো সুন্দর করে তোলে। এছাড়াও ব্রণ, পিম্পলস-এর মত গুরুতর সমস্যাগুলির সমাধান করে। ত্বকের রং হালকা করে আরো ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা অনেক দ্রুত ত্বককে ফর্সা করে তোলে। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত সমস্যা কিংবা পিগমেন্টেশনের মতন সমস্যা থাকলে সেই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে অ্যালোভেরা। ()

১১) ত্বক পরিচর্যায় মুলতানি মাটি

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

মুলতানি মাটি – চার চামচ
চন্দন গুঁড়ো – এক চামচ
গোলাপ জল – পরিমাণ মতো

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • মুলতানি মাটি, চন্দন গুঁড়ো এবং গোলাপ জল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে পরিষ্কার ত্বকের ওপর, গলায়, ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • এরপর পাখার তলায় কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • তারপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।
  • এটি ত্বকের ফর্সাকারী প্যাক ছাড়াও ব্রণ ও এবং পিম্পল এর সমস্যার সমাধান করবে।
  • তবে খুব বেশি শুষ্ক ত্বক যাদের তারা গোলাপ জলের বদলে মধু দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুলতানি মাটিতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় বিভিন্ন খনিজ ত্বককে ভেতর থেকে পরিশুদ্ধ করে তোলে। এছাড়াও তৈলাক্ত ত্বক ও ব্রণের সমস্যা থাকলে মুলতানি মাটির ব্যবহার করা আবশ্যক। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল সরিয়ে ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে। বার্ধক্যজনিত কারণে যাদের ত্বক ভারসাম্য হারিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মুলতানি মাটি একটি অসাধারণ উপাদান। মূলতঃ তৈলাক্ত ত্বকের জন্যই মুলতানি মাটি খুব উপযোগী। ঘরোয়া পদ্ধতিতে মুলতানি মাটির প্যাক বানিয়ে ত্বককে আরও ফর্সা করে তুলুন। (১০)

১২) ত্বককে ফর্সা করে তুলতে মধুর ব্যবহার

The use of honey to make the skin wrinkle
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

মধু – দু’চামচ
পাতিলেবু – হাফ চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • মধু এবং পাতিলেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • মিশ্রণটি এবার পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে নিন।
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • দুধ, মধু, বেসন দিয়ে প্যাক তৈরি করেও মুখে লাগাতে পারেন।
  • এই প্যাকটি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করুন।
  • দু তিনবার ব্যবহারের পরেই তফাৎ বুঝতে পারবেন।
  • সান ট্যান এবং যেকোন দাগ ছোপ অনেক হালকা করে দেবে এই মিশ্রণটি।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ত্বকের শুষ্কতা কাটিয়ে ত্বককে আর্দ্র করে উপযুক্ত ময়েশ্চার প্রদান করে থাকে মধু। এছাড়াও এর মধ্যে উপস্থিত ব্লিচিং উপাদান ত্বককে ফর্সা করে তুলতে এবং ব্রণ কিংবা পিম্পলের দাগ কে হালকা করতে সহায়তা করে। তবে খুব বেশি সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে মধু সহনশীল নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে মধু ব্যবহার করার আগে তা গলায় কিংবা হাতের কনুইতে একবার লাগিয়ে দেখবেন ত্বকে কোনো রকম অ্যালার্জি হয় কিনা।

১৩) চন্দন ব্যবহার করে ত্বককে ফর্সা করে তুলুন

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

চন্দন কাঠ বা চন্দনের গুঁড়ো – এক চামচ
দুধ – দু চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • কাঁচা দুধের মধ্যে চন্দনের গুঁড়ো নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখের ওপর পুরু ভাবে লাগিয়ে নিন।
  • ১০ থেকে ১৫ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি ত্বককে দ্রুত উজ্জ্বল করে তুলবে।
  • এছাড়াও চন্দনের গুঁড়োর সাথে মধু, কমলালেবুর খোসা, দই ইত্যাদি দিয়ে প্যাক তৈরি করে একই পদ্ধতিতে মুখে ব্যবহার করতে পারেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুখের মধ্যে থাকা যে কোন ধরনের দাগ ছোপ কিংবা কাটা দাগ সবকিছু নিরাময়ে চন্দনের ব্যবহার অতুলনীয়। চন্দনের মধ্যে এক ধরনের শীতল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বককে ভেতর থেকে পরিচ্ছন্ন এবং সতেজ করে তোলে। এছাড়াও চন্দনের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি ত্বককে ব্রণ, ব্রণের দাগ, বার্ধক্য জনিত দাগ, সান ট্যান থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে দাগহীন করে উজ্জ্বল করে তোলে।

১৪) শশা

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

শসার রস – ৩ টেবিল চামচ
লেবুর রস – ১ টেবিল চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • শসার রস এবং লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  • এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট।
  • কিছুক্ষন মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • মুখে কোন প্রকার সাবান দেবেন না।
  • সপ্তাহে রোজই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বক দাগহীন হয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
  • এক সপ্তাহেই তফাৎটা বুঝতে পারবেন।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

শসার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের নির্জীবতা সরিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বলতা প্রদান করে। শশা সবচেয়ে ভালো টোনারের কাজ করে। গরমের দিনে বাইরে থেকে বেরিয়ে এসে শসার রস মুখে লাগিয়ে নিলে বাইরের ক্লান্তিটা মুখ থেকে সরে যায় এবং ত্বক তার জৌলুস ফিরে পায়। (১১)

১৫) ত্বক ফর্সা করতে আলুর ব্যবহার

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

আলুর রস – ৩ টেবিল চামচ
লেবুর রস – ১ টেবিল চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • আলু এবং লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • মিশ্রণটি এবার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে।
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুদিন এই মিশ্রণটি মুখে ব্যবহার করুন।
  • এটি ব্যবহারের ফলে খুব দ্রুত ত্বকের যেকোনো দাগ হালকা হবে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। ফর্সা হওয়ার অন্যতম সহজ উপায় আলুর ব্যবহার।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

আলুর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তোলে। এটি ত্বকের রিংকেলস কমিয়ে ত্বককে জীবন্ত করে তোলে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের ওপর থেকে যে কোনো রকমের কালো দাগ, ব্রণের দাগ অল্প সময়ে পরিষ্কার করে দিতে পারে। এছাড়াও চোখের তলায় কালো দাগ খুব সহজেই আলু ব্যবহার করে পরিষ্কার করা যায়। এটি ত্বকে রক্ত সঞ্চালন এর বৃদ্ধি ঘটায়। ত্বকের শুষ্কতা থেকে বাঁচিয়ে ত্বককে আরও আর্দ্র করে তোলে। এর পাশাপাশি ত্বক থেকে সানবার্ন দূর করতেও এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। (১২)

১৬) কমলালেবুর খোসা

The orange peel
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো – ১ টেবিল চামচ
মধু – ১ চা চামচ
হলুদ – এক চিমটি
লেবুর রস – কয়েক ফোঁটা
জল – পরিমাণ মতো

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • কমলা লেবুর খোসার গুঁড়ো, মধু, হলুদ এবং লেবুর রস মিশিয়ে তার মধ্যে অল্প পরিমাণে জল যোগ করে একটি ঘন মিশ্রন তৈরি করে নিন।
  • এবার এটি মুখের ওপর হালকা করে লাগিয়ে নিন।
  • তারপর ২০ মিনিট এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • ২০ মিনিট বাদে এটি শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি ব্যবহারের ফলে দ্রুত মুখের মধ্যে উজ্জলতা লক্ষ্য করতে পারবেন। ত্বকের যে কোন দাগ ছোপ খুব কম সময়ে হালকা করতে সাহায্য করবে এই ফেস প্যাক।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

কমলালেবুর মধ্যে থাকা সাইট্রাস জাতীয় উপাদান ত্বকের ছিদ্রগুলি থেকে সহজেই নোংরা পরিস্কার করে এবং এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ত্বককে বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে ত্বককে আরও উজ্জল করে তোলে। এতে ত্বক ফর্সা হয়। এটি ব্যবহারের ফলে খুব দ্রুত ত্বকের যেকোন সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়। (১৩)

১৭) গাজর এবং অ্যাভোকাডো

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

অ্যাভোকাডো : একটা
গাজর : একটা
মধু : ১ চা চামচ
ডিম : একটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • গাজরটি সিদ্ধ করে নিন এবং অ্যাভোকাডোটি মিক্সিতে বেটে নিন।
  • এবার গাজর সিদ্ধ এবং অ্যাভোকাডোটা ভালো করে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন।
  • তার মধ্যে ডিম এবং মধু যোগ করুন।
  • এবার এই মিশ্রণটি মুখে ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে দিন।
  • মিশ্রণটি ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে দিন।
  • সপ্তাহে একবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন।
  • এই মিশ্রণটি ব্যবহারের ফলে ত্বক আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং ত্বকের চামড়া টানটান হয়ে যাবে।
  • বার্ধক্যজনিত কারণে যাদের ত্বকের সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদের জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ফেসপ্যাক।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

গাজর এবং অ্যাভোকাডো কেবল বাহ্যিক ভাবেই নয় রোজ খেলেও ত্বক ভেতর থেকে স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার হয়। গাজরের মধ্যে থাকা বিটা ক্যারোটিন এবং লাইকোপিন ত্বককে উপযুক্ত পুষ্টি প্রদান করে এবং এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান সমূহ ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে। এছাড়া অ্যাভোকাডোর পুষ্টিকর গুণগুলি ত্বককে আরও সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে। (১৪)

১৮) জাফরান

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

জাফরান – কয়েক টুকরো
দুধ – দু চামচ
চন্দন গুঁড়ো – এক চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • দুধের মধ্যে এক ঘন্টা ধরে জাফরানটাকে ফুটিয়ে নিন।
  • এরপর দুধ টাকে ঠান্ডা করে নিন।
  • দুধ ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ভালো করে চন্দন পাউডার মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
  • এবার এই প্যাকটি মুখে গলায় সমস্ত জায়গায় লাগিয়ে নিন।
  • প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এই প্যাকটি ব্যবহারের ফলে মুখের ত্বক আরও উজ্জল এবং দীপ্তিময় হয়ে উঠবে এবং যেকোন দাগ কমে যাবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

জাফরানে থাকা বিভিন্ন উপাদান গুলি ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে ফর্সা করে তোলে। প্রাকৃতিক ভাবে ত্বকের দাগ কমানোর জন্য জাফরানের ব্যবহার করা হয়। (১৫)

১৯) চালের গুঁড়ো

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

চালের গুঁড়ো – ২ টেবিল চামচ
শসার রস – ১ চা চামচ
লেবুর রস – ১ চা চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • চালের গুঁড়ো, শসার রস এবং লেবুর রস দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।
  • এবার এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দেওয়ার পর উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২ বার এই প্যাকটি মুখে ব্যবহার করুন।
  • মুখে ছোট ছোট দানা জাতীয় কোন সমস্যা দেখা দিলে কিংবা ব্রণর সমস্যায় এটি যথেষ্ট কার্যকরী।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

চালের গুঁড়ো ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে মসৃণ এবং নরম করে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও ব্রণের দাগের সমস্যা বা বার্ধক্যজনিত রিংকেল কমাতে চালের গুঁড়োর জুড়ি মেলা ভার।(১৬)

২০) ওটস

Oats
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

ওটস – ৩ টেবিল চামচ
টক দই – ২ টেবিল চামচ
গোলাপ জল – ১ টেবিল চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • শুকনো ওটস প্রথমে মিক্সিতে ভালো করে গুঁড়ো করে নিন।
  • এবার এর মধ্যে টক দই এবং গোলাপ জল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার এই মিশ্রণটি পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন।
  • ১৫ মিনিট এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে অন্তত দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
  • এই প্যাকটি ব্যবহার করার পরেই বুঝতে পারবেন ত্বক আগের তুলনায় কত নরম এবং মোলায়েম হয়ে উঠেছে। এটি খুব দ্রুত ত্বককে উজ্জল এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ওটসের মধ্যে ত্বকের এক্সফলিয়েশন এর সমস্ত উপাদান মজুদ রয়েছে। এটি ত্বককে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ত্বকের মধ্যে থাকা সমস্ত মৃত কোষ গুলিকে সহজেই সরিয়ে দিতে পারে এবং ত্বককে নরম করে তোলে। ওটসের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে শীতল রাখে এবং ত্বকের ওপরে একটি আলাদা সুন্দর মোলায়েম ভাব অনুভূত হয়। বাজার চলতি যেকোনো ধরনের স্ক্রাবারের তুলনায় ওটস সবচেয়ে ভালোভাবে ত্বক থেকে মৃত কোষ সরাতে সক্ষম।(২০)

২১) ডাবের জল

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

ডাবের জল – পরিমাণ মতো

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • পরিমাণ মতো ডাবের জল নিয়ে মুখ এবং ঘাড় এ ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • জলটি লাগানোর পর হালকা হাতে একটু মেসেজ করে নিন।
  • তারপর আরেকবার ত্বকের ওপরে ডাবের জল লাগিয়ে নিন।
  • এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • তারপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • সপ্তাহে তিনদিন স্নানের আগে কিংবা পরে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • দু সপ্তাহ ব্যবহারের পরেই ত্বকের মধ্যে তফাৎটা বুঝতে পারবেন। যে ত্বককে আরো কত উজ্জ্বল এবং দাগহীন করে তুলেছে ডাবের জল।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ত্বক ফর্সা করে তুলতে এবং ত্বক থেকে যেকোন কালো দাগ দূর করতে ডাবের জল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। বসন্তের দাগ কিংবা পোড়া দাগ, ব্রণের দাগ বা যে কোন ধরনের ত্বকে দাগের সমস্যা কিংবা বার্ধক্যজনিত রিংকেলস ফাইন লাইনস এর সমস্যা দূরীকরণে ডাবের জলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দৈনিক ডাবের জল ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা এবং দাগহীন হয়ে ওঠে। ডাবের জলের মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টিকর করে তোলে।(১৭)

২২) মুসুর ডাল

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

মুসুর ডাল – দু চামচ
মধু – এক চামচ
লেবুর রস – কয়েক ফোঁটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • আগের দিন রাতে মুসুর ডাল জলে ভিজিয়ে রাখবেন।
  • সকালবেলা উঠে মুসুর ডাল বেটে নেবেন। এবার মিশ্রণটির মধ্যে মধু এবং লেবু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করবেন।
  • পরিষ্কার ত্বকে মিশ্রণটি লাগিয়ে নেবেন।
  • ১৫ মিনিট অপেক্ষা করবেন।
  • এরপর সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন।
  • সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
  • এই প্যাকটির প্রথম ব্যবহার থেকেই ত্বকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
  • এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বককে আরও সুন্দর করে তুলবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

মুসুর ডালের মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও মুসুর ডালের মধ্যে থাকা প্রোটিন উপাদানগুলি ত্বককে পুষ্টি জুগিয়ে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

২৩) কলার মাস্ক

Caller Mask
Image: Shutterstock

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

কলা – একটি
মধু – এক চামচ
লেবু – কয়েক ফোঁটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • কলাটিকে প্রথমে মিক্সিতে ভালো করে পিষে নিতে হবে।
  • এরপর মিশ্রণটির মধ্যে মধু এবং লেবুর রস যোগ করতে হবে।
  • মধু এবং লেবুর রস দিয়ে কলার মিশ্রণটি ভালোভাবে প্রস্তুত করুন।
  • এবার এই মিশ্রণটি মুখে গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।
  • কুড়ি মিনিট মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • তারপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • এই মিশ্রণটি সপ্তাহে একদিন করে ব্যবহার করুন।
  • এক মাস ব্যবহার করার পরেই ত্বকের মধ্যে পার্থক্যটা নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।
  • তবে এই মাস্ক ব্যবহার করার পড়ে কখনোই মুখে সাবান ব্যবহার করবেন না। তাতে ত্বকের উপকারের বদলে অপকারই হবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল যা ব্যবহারের ফলে ত্বক তার উপযুক্ত পুষ্টি পায়। মূলত শুষ্ক ত্বকের জন্য কলার মাস্ক ব্যবহার করা হয়। কলার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলি ত্বককে বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং কম খরচে ত্বক তার পুষ্টি পায়। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন-এ, বি, ই ত্বকের দাগ দূর করে ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করে এবং এর মধ্যে উপস্থিত পটাশিয়াম ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কোন রকমের জল কিংবা ত্বকের উপর লাল ভাব থাকলে সেক্ষেত্রেও কলার ব্যবহার করা যেতে পারে।

২৪) গ্রিন টি

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

গ্রিন টি ব্যাগ – দুটি
লেবুর রস – ১ চা চামচ
মধু – ১ টেবিল চামচ

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • গ্রিন টি ব্যাগ দুটো কেটে গ্রিন টি গুলো বের করে নিন।
  • এবার গ্রীন টির সাথে লেবুর রস এবং মধু যোগ করে একটি ভাল মিশ্রণ তৈরি করুন।
  • এবার এই মিশ্রণটি মুখে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
  • পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
  • এটি সপ্তাহে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • এটি দৈনন্দিন ব্যবহার করার ফলে ত্বক আরও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ত্বককে কেবলমাত্র বাইরে থেকেই নয় ভেতর থেকেও সুন্দর করে তোলে গ্রিন টি। গ্রিন টির মধ্যে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানসমূহ ভেতর থেকে সমস্ত রকম টক্সিন বের করে ত্বককে পরিষ্কার রাখে এবং সূর্য রশ্মির খারাপ ক্ষতিকর প্রভাব থেকে এটি ত্বককে রক্ষা করে।(১৮)

২৫) গরম তেল ম্যাসাজ

কি কি উপাদান প্রয়োজন :

বাদাম তেল/ জলপাই তেল – পরিমাণ মতো
নিম পাতা – কয়েকটা

কিভাবে ব্যবহার করবেন?

  • প্রথমে যে তেলটা নেবেন তা বাদামতেলই হোক কিংবা জলপাই তেল সেটিকে হালকা গরম করে নিন।
  • এর মধ্যে নিম পাতা দিয়ে তেলটির মধ্যে হালকা গরম করে নিন।
  • এরপর সারা শরীরে তেল ভালো করে মাসাজ করে নিন।
  • ৩০ মিনিট এভাবেই রেখে দিন।
  • তারপর ভালো করে স্নান করে নিন।
  • এইভাবে সপ্তাহে দুবার যদি এটি করতে পারেন তবে এটি ত্বককে আরও সুন্দর করে তুলবে এবং ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা করে তুলবে।
  • তা ছাড়াও এটি শরীরকে আরো স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করার পাশাপাশি মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করবে।

কিভাবে এটি ত্বকের সাহায্য করে?

ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে এটি অন্যতম। একটি নির্দিষ্ট সময়ে সারা শরীরে গরম তেল মাসাজ করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ত্বকের কোষ গুলি জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং সেগুলি ত্বককে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যকর সুন্দর এবং উজ্জ্বল করে তোলে।(১৯)

ফর্সা হওয়ার জন্য কি কি খাওয়া উচিত এবং কি কি উচিত নয় : Diet for Fair Skin in Bengali

ফর্সা ও সুন্দরী হয়ে ওঠার জন্য কেবলমাত্র ওপর থেকে পরিচর্যাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাদ্য, সঠিক ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন যা আপনাকে ভিতর থেকে সৌন্দর্য প্রদান করবে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখতে হবে যেগুলো আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর এবং উজ্জ্বল করে তুলবে। কেননা কেবলমাত্র বাইরের উপকরণ ব্যবহারই যথেষ্ট নয়। ত্বক ফর্সা করার উপায় হিসেবে এবার এক নজরে জেনে নিন কোন খাদ্য গুলো আপনার খাদ্যতালিকায় রাখলে আপনি আরো সুন্দরী হয়ে উঠবেন।

  1. খাদ্যতালিকায় টমেটো রাখবেন। টমেটো ভেতর থেকে ত্বককে পরিষ্কার করে লাবণ্যময়ী করে তোলে। এর মধ্যে থাকা লাইকোপিন এবং অন্যান্য উপাদানগুলি ত্বকের যেকোনো দাগ ছোপকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে এটি রক্ষা করে। টমেটোর মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান গুলি ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে সুন্দর করে তোলে। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন খাদ্যতালিকায় টমেটো রাখুন। এতে শরীর ভেতর থেকেই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির সাথে এবং বাইরের ক্ষতিকর দূষণের সাথে মোকাবেলা করতে পারবে এবং ত্বক সুন্দর হয়ে উঠবে।
  1. চেরি, ব্লুবেরির মতন বিভিন্ন বেরি জাতীয় উপাদান খাদ্যতালিকায় রাখুন। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হয়। ত্বক ফর্সা করার একটি অন্যতম উপায় হল খাদ্য তালিকায় বেরিয়ে জাতীয় ফল রাখা। এটি ত্বককে যেকোন দাগ ছোপ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। কখনো কখনো এটি ত্বকের মধ্যে থাকা বার্ধক্যজনিত দাগ বা মেচেতার দাগকে ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এগুলি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় এর মধ্যে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকে, যা ত্বকে যে কোন রকম ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
  1. খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের জন্য সামুদ্রিক মাছ খুব ভালো। এর মধ্যে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি প্রদান করে এবং বাইরের যে কোনো রকম রাসায়নিক উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাব নিজে থেকেই প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়াও শরীরকে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে ত্বকের উপরে বার্ধক্যজনিত যে ছাপ লক্ষ্য করা যায় সেগুলোকে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ত্বকের উপর থেকে ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব কমিয়ে ত্বককে টানটান করে তোলে। প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন খাদ্যতালিকায় সামুদ্রিক মাছ রাখা উচিত।
  1. বাদামী চাল অর্থাৎ ব্রাউন রাইস : ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে ত্বক সুন্দর রাখতে ব্রাউন রাইস এর ভূমিকা অপরিসীম। এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্রতা প্রদান করে পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করে। এর মধ্যে উপস্থিত সিরামাইড লিপিডগুলি ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি প্রদান করে সুন্দর করে তোলে।
  1. দৈনিক খাদ্যতালিকায় যে কোন ধরনের বাদাম রাখুন। আমন্ড, আখরোট, কাজুবাদাম জাতীয় বাদামগুলি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। সারারাত বাদাম গুলি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে চার পাঁচটি গ্রহণ করুন। এটি ত্বকের শুষ্কতা কমিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রদান করবে ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা করে তুলবে। বাদাম ভিটামিন ই সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বকের ওপর একটি আলাদা উজ্জ্বলতা লক্ষ্য করা যায়। দৈনিক যারা বাদাম খায় তাদের চেহারায় আলাদা একটি জেল্লা লক্ষ্য করা যায়।
  1. খাদ্যতালিকায় কলা রাখুন। প্রতিদিন একটি করে কলা খান। কলা ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি বার্ধক্য জনিত সমস্যা গুলিকে প্রতিরোধ করে এবং শরীরের হাঁড়কে ভেতর থেকে শক্তিশালী রেখে ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে।
  1. দৈনিক টক দই খাদ্যতালিকায় রাখুন। দই ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর রাখে এবং যেকোন দাগ ছোপ দূর করে ত্বককে দাগহীন করে তোলে। দই এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলি পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। এবং অবশ্যই মনে রাখবেন পেট পরিষ্কার থাকলে তার প্রতিফলন মুখে ঘটবে অর্থাৎ আপনার মুখের ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
  1. দৈনিক সাইট্রাস জাতীয় ফলের রস খাদ্যতালিকায় রাখুন। লেবুর রস পান করার ফলে ত্বক ভেতর থেকেই স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।
  1. দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। দুধ জাতীয় উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে প্রোটিন সমৃদ্ধ করে এবং উজ্জ্বল করে তোলে। তাই দৈনিক খাদ্যতালিকায় দুধ রাখুন। প্রয়োজনে প্রোটিনসমৃদ্ধ সয়া দুধ ব্যবহার করতে পারেন।
  1. দিনে ৪ থেকে ৫ লিটার জল খান। শরীরে জলের পরিমাণ কম হলে শরীর টক্সিন বের করতে পারবে না। যার ফলে শরীরের ভেতর টক্সিন জমে থাকলে তা ত্বকের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে। তাই সুন্দর ঝলমলে স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বক পেতে দৈনিক খালি পেটে এক গ্লাস করে জল খান।
  1. যে কোনো রকমের ফাস্টফুড, প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলুন। কেননা এই ধরনের খাবার গুলি শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলে। যেই প্রভাব ত্বকের ওপরে ও লক্ষ্য করা যায়। দৈনন্দিন যারা ফাস্টফুড খান তাদের ত্বক খুব সহজেই বয়স্ক লাগে। সে কারণে নিজেকে সুন্দর রাখার তাগিদে বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন এবং ঘরে তৈরি করা শুদ্ধ খাবার খান।

ফর্সা হওয়ার আরো কিছু উপায় – Other Fairness Tips in Bengali

Other Fairness Tips in Bengali
Image: Shutterstock

ফর্সা সুন্দর ত্বক কে না চায়, তাই জন্য দৈনিক এ সমস্ত ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করার পাশাপাশি কিছু পরিমাণ খাদ্য খাওয়ার পরেও এই বিষয়গুলি আমাদের অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। ত্বক ফর্সা করার টিপ্স হিসেবে মেনে চলুন এগুলি :

  1. ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং

প্রতিদিন দুবার ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং করবেন। এটি ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে। একবার সকাল বেলা স্নান করে উঠে এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ত্বক পরিষ্কার করে নেবেন। দিনের শুরুটা যদি সুন্দর হয় তাহলে সবার মনটাই ভালো লাগে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ক্লিনজিং টোনিং ময়েশ্চারাইজিং করা প্রয়োজন। রাতেই আমাদের ত্বক তার সমস্ত ক্ষতগুলিকে পূরণ করে। সেইজন্য তখন যদি ত্বক পরিষ্কার না থাকে ত্বক স্বাভাবিক ভাবে নিজের অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। ফর্সা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে এটি অন্যতম পর্যায়।

  1. স্ক্রাবিং

সপ্তাহে অন্তত দুবার ত্বকে স্ক্রাবিং করতে হবে। ঘরোয়া উপাদান দিয়ে হোক কিংবা বাজারজাত উপাদান, সপ্তাহে দুদিন এর ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বক খুব দ্রুত মৃতকোষ ত্যাগ করে ও নতুন কোষ উৎপন্ন করে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। সেইজন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে ত্বকে স্ক্রাবিং খুব প্রয়োজনীয়। স্ক্রাবিংয়ের বাজারজাত পণ্যের ব্যবহার না করাই ভালো। স্ক্রাবিংয়ের ক্ষেত্রে ঘরোয়া বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।

  1. সানস্ক্রিন

সঠিকভাবে সানস্ক্রিনের ব্যবহার করতে হবে। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা যেই ঋতুই হোক না কেন, সানস্ক্রিনের ব্যবহার আবশ্যক। আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করি গ্রীষ্মকালে যেহেতু রোদের তাপ রয়েছে তাই গ্রীষ্মকালে সানস্ক্রিন প্রয়োজন। কিন্তু না, বর্ষাকালে কিংবা শীতকালেও রোদের তাপ কম থাকলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব ত্বকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করেই থাকে। যে কারণে প্রত্যেক ঋতুতেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। ঘরে থাকলেই যে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে না এই ধারণাটা ভুল। কেননা ঘরে থেকে রান্নাঘরে কাজ করলেও কিংবা সূর্য রশ্মির তাপের রিফ্লেকশন এর ফলেও ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই দিনের বেলা যে কোনো ঋতুতেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা আবশ্যক। বাইরে বেরোনোর ৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।

  1. দৈনিক ৪ থেকে ৫ লিটার জল খাবেন। কেন না শরীরে যথাযথ জল পান করলে শরীর ভেতর থেকে সুন্দর হয় এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
  1. খাদ্য তালিকা সঠিক ভাবে প্রস্তুত করবেন যাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য থাকে। এগুলো আপনাকে ভেতর থেকে আরো সুন্দর করে তুলবে।
  1. দৈনিক সকাল বেলা ৩০ মিনিট করে যেকোনো যোগা ও ব্যায়াম করবেন। যোগা ও ব্যায়াম আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। শরীরের প্রত্যেকটি কোনায় কোনায় সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন হলেই ত্বক আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
  1. রোদে বেরোনোর সময় অবশ্যই ছাতা নিয়ে বেরোবেন। রোদের তীব্রতা বেশি থাকলে ছাতা, সানগ্লাস এবং মুখে স্কার্ফ জড়িয়ে রাস্তায় বের হবেন।
  1. খুব গরমের সময় সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত রোদে না বেরোনোর চেষ্টা করবেন। কেননা এই সময় রোদের তাপের তীব্রতা অতিরিক্ত থাকে যা ত্বকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
  1. ধূমপান নিয়ন্ত্রণ করুন কিংবা বন্ধ করে দিন। কেননা অত্যধিক ধূমপানের ফলেও তা ত্বকে প্রভাব ফেলে। তাই সব কিছু বিউটি টিপস মেনে চললেও ত্বকের উন্নতি নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ধূমপান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
  1. চা কফির মত উত্তেজক পানীয়গুলি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ এগুলির প্রভাব ত্বকে মারাত্মকভাবে লক্ষ্য করা যায়। প্রয়োজন হলে দিনে এক থেকে দু’বার গ্রিন-টি পান করুন। এটি ত্বকের জন্য উপকারী এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
  1. দিনে আট ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। একটি সুস্থ মানুষের জন্য এই পরিমাণ ঘুম অবশ্যম্ভাবী। যে কারণে দিনে যতই কাজ থাকুক না কেন ঘুমোতে যাবার আগে এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়টাকে নির্দিষ্ট রাখুন। এটি শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। এর প্রভাব আপনার ত্বকের ওপর দিয়ে লক্ষ্য করা যায়।

ত্বক ফর্সা করার আগে কতগুলি বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করবেন :

ত্বক ফর্সা করবেন তা বলে এই নয় যে ত্বকের ক্ষতি করে তাকে উজ্জ্বল করার চেষ্টা করবেন। কেননা কোন কিছুই হঠাৎ করে সম্ভব না। যে কোন প্রক্রিয়াই ধীর গতিতে কাজ করে আর দ্রুত ফলাফলের জন্য এমন কিছু করে বসবেন না যা ত্বককে চিরতরে খারাপ করে দিতে পারে। ত্বক ফর্সা করার আগে কতগুলো জিনিস মনে রাখবেন যেগুলি আপনার ত্বকের জন্য খারাপ হতে পারে।

  1. ত্বককে তৎক্ষণাৎ সুন্দর এবং ফর্সা করে তোলার জন্য কখনোই কোন ধরনের ব্লিচ ব্যবহার করবেন না। এটি ত্বকের চামড়ার পক্ষে অত্যন্ত খারাপ। ব্লিচের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বকের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
  1. কোন ধরনের ঔষধি ক্রিম ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করুন যে সেটি আপনার ত্বকের উপযোগী কি না।
  1. ধূমপানের পাশাপাশি মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত মদ্যপানের প্রভাব ত্বকে লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে ত্বক বয়স্ক এবং বলিরেখা যুক্ত হয়ে যায়।
  1. বিবি ক্রিম, ফর্সাকারী ক্রিম গুলির মতন যে সমস্ত ক্রিমগুলি হাতে গোনা কয়েক দিনে ত্বককে ফর্সা করে তোলার দাবি রাখে সে সমস্ত ক্রিম এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা এগুলো ক্ষতি না করে ত্বককে সহজে ফর্সা করে দিতে পারে না। এমনকি আপনার গায়ের রং যে রকম সেটি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হলেই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। প্রত্যেক মানুষের শরীরের গঠন আলাদা এবং তাদের মেলানিন উৎপাদন ক্ষমতাও আলাদা। তাই কোন একটি ক্রিম প্রত্যেকের ত্বকের পক্ষে মানানসই নাও হতে পারে। তাই টিভিতে দেখে কিংবা কারোর মুখে শুনেই চটজলদি সুন্দর হওয়ার জন্য এমন কোন ক্রিম ব্যবহার করবেন না যা আপনার ত্বককে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।

আজকের এই নিবন্ধ থেকে আমরা ত্বক পরিচর্যা এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বককে কিভাবে সুন্দর এবং ফর্সা করে তোলা যায় সেরকম অনেক পদ্ধতি জানলাম। সুতরাং বাজারজাত রাসায়নিক ব্যবহৃত পণ্য সামগ্রী ব্যবহার না করে ঘরে বসেই ফর্সা হওয়ার বিউটি টিপস গুলো মেনে ধীরে ধীরে আমরা নিজেদেরকে সুন্দরী করে তুলতে পারি এবং অবশ্যই তা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে। ফর্সা হওয়ার জন্য ঘরোয়া উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি উপযুক্ত পরিমাণে খাদ্য তালিকা মেনে জল গ্রহণ করে চলা, দৈনিক ব্যায়াম করা এবং ছোট ছোট বিউটি টিপস গুলো যদি আমরা মেনে চলতে পারি তাহলে এক মাসেই আমরা নিজেদের ত্বককে এবং নিজেদেরকে আরো সুন্দর ভাবে সামনের আয়নায় দেখতে পাবো। শরীর যদি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকে তার প্রতিফলন ঘটে ত্বকে। তাই শরীরকে আগে স্বাস্থ্যকর করে তুলুন। তার প্রতিফলন ত্বকে প্রকাশ পাবে এবং একটি সুন্দর ফর্সা উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হবেন আপনি।

আপনি এই টিপ্সগুলির কোনটা মেনে চলেন? আপনার কাছেও কি আছে আরো কিছু ফর্সা হওয়ার টিপ্স? অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে জানান।

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our vibrant community! Share your stories, experiences, and insights to connect with like-minded individuals.

Latest Articles