মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিসঃ একটি বেশ বিরল অথচ মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়া ও মারনাত্তক রোগ

Written by MomJunction MomJunction
Last Updated on

মেনিনজাইটিস কি?

মানুষের মস্তিস্ক ও শিরদাঁড়ার বাইরে যেই সুরক্ষা প্রদানকারী আভরন থাকে সেগুলি যখন হঠাৎ ফুলে যেতে শুরু করে তখন তাকে বলা হয় মেনিনজাইটিস। এই ফুলে যাওয়ার কারন হল মস্তিস্ক ও শিরদাঁড়ার বাইরের আভরনে ভাইরাস অথবা ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্ক্রমণ যা ফলস্বরুপ ফুলে যেতে শুরু করে ()। যদিও বিভিন্ন রকমের ড্রাগ অথবা শরিরে কোন আঘাত লাগার ফলেও মেনিনজাইটিস হতে পারে।

মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিসঃ একটি দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া সঙ্ক্রমণ:

ইনভেসিভ মেনিনগোকক্কাল ডিসিজ (আই.এম.ডি ) হল একটি বিরল অথচ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া একটি ব্যাক্টিরিয়া দ্বারা সংক্রমিত রোগ যা নিসেরিয়া মেনিঙ্গিতাইদিস নামক একটি ব্যাক্টিরিয়া দ্বারা শুরু হয়। সাধারনত মস্তিস্ক এবং রক্তের মধ্যেই এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে সেপ্তিসেমিয়া বা ব্লাড পয়সনিং ধরা পড়ে ()। যদিও বর্তমানে চিকিৎসার নানারকমের পদ্ধতি ও অগ্রগতি দেখা গিয়েছে, তার স্বত্বেও এই রোগের ফলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। মৃত্যু যদি নাও ঘটে, এর ফলে দীর্ঘ বছরের জন্যে সেই মানুষটির ও তার পরিবারের ওপর এর নানারকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় ()।

এই রোগটি খুবই অনিশ্চিত ও এর ফলে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যেকোনো বয়সের মানুষের ওপর প্রভাব ও আক্রমণ হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই রোগ নির্ণয় হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাণের বিপদ ঘটতে পারে ()। ভারতবর্ষে গত ১০ বছরে ৫০,০০০ এরও বেশি মানুষের মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস ধরা পড়েছে যার ৩,০০০ সংখ্যা মৃত্যুতে পরিণত হয়েছে (), () ।

বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, ১০ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ যার এই রোগটি নির্ণয় করা হয়েছে তার মৃত্যু নিশ্চিত এবং বাকি ১০ থেকে ২০% মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে নানারকমের জটিলতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্মুখিন হয়ে থাকে।

যে কেউ এই রোগের শিকার হতে পারে:

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস ৫ বছরের নীচে বাচ্চাদের হয়ে থাকে, তবে এটি মাঝবয়সী বা তরুন বয়সেও হতে পারে। পৃথিবীর যেকোনো অংশে যে কারুর এই রোগ হতে পারে। অনেকসময়, এর লক্ষনগুলি প্রথমদিকে ধরাও পড়েনা।

কোন কোন সময় এই রোগ দেখা দিতে পারে?

  • যারা একই গোষ্ঠীর মধ্যে বাস করে যেমন মিলিটারি, ডরমেটরি, ইত্যাদি অথবা যারা একসাথে বড় দলে থেকে হজ অথবা কোন ধার্মিক অনুষ্ঠানে বাস করে তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা দিতে পারে ()।
  • এমন কিছু রোগ যেমন এইচ আই ভি, এস্প্লেনিয়া বা কম রোগ প্রতিরোধক শক্তিতে যারা ভোগে তাদেরও এই রোগ দেখা দিতে পারে ()।

মেনিনজাইটিস রোধ করতে প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন বা অন্যান্য উপায়ঃ

মেনিনজাইটিস এমন একটি মারাত্মক রোগ যা ব্যাক্টিরিয়া, ভাইরাস বা অন্যান্য কারনে হয়ে থাকে ()। তাই প্রতিটি কারনের জন্যে এখনো অবধি ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। তবে ৩ টি কারনের জন্যে ভ্যাক্সিন অবশ্যই পাওয়া যায়ঃ

  • যেই মেনিনজাইটিস স্ত্রেপটোকক্কাস ব্যাক্টিরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে অর্থাৎ নিউমকক্কাল মেনিনজাইটিস।
  • হিমোফিলাস ইনফ্লুএঞ্জা টাইপ বি অর্থাৎ হিমোফিলাস মেনিনজাইটিস।
  • নিসেরিয়া মেনিনজাইটিস অর্থাৎ মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস।
  • ডাক্তারের সাথে অবশ্যই এই ৩ টি কারন সম্পর্কে ভাল করে জেনে নেবেন।

আসুন সকলে মিলে মেনিনজাইটিসের বিরুধ্যে লড়াই করিঃ

মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিসের প্রভাব যতটা গুরুতর, এর সম্পর্কে জ্ঞান খুবই কম। তাই এই পোস্টটি অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করুন ও সকলের উপকার করুন।

এই পোস্টটি জনগণের স্বার্থে সানফি পাস্তিওর দ্বারা প্রকাশিত করা হয়েছে।

Author: Madhurima

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our vibrant community! Share your stories, experiences, and insights to connect with like-minded individuals.

Latest Articles